তুফান কেমন সিনেমা ?
- তুফান কমার্শিয়ালি ওয়েল ডিজাইনড সিনেমা। দর্শক যা যা পছন্দ করবে তার সবকিছুই রাফি ও তার টিম এখানে দিয়েছে: বিশাল ক্যানভাস, বিগ অ্যারেঞ্জমেন্টের গান, সেট, কস্টিউম, কমেডি, অ্যাকশন, টুইস্ট। শাকিব খানকে যতটা স্মার্টভাবে ব্যবহার করা হয়েছে সেটা এরআগে কেউ করেনি, স্টাইল, সয়্যাগ, মেশিন গান সিন, হাসপাতালে একটা ওয়ান টেক অ্যাকশন শট আছে দুর্দান্ত, পোস্ট ক্রেডিট সিনের টুইস্ট ও উপভোগ্য। বিশেষ করে, চঞ্চল চৌধুরী যখন থেকে এন্ট্রি নেয়, পুরো সিনেমা জমিয়ে তোলে। অনবদ্য, কমিক টাইমিং আর স্ক্রিন প্রেজেন্স। আর শাকিব - চঞ্চলকে এক সিনেমায় দেখতে পাওয়া একটা ট্রিট। এটার জন্যেও রাফি ধন্যবাদ পাবেন। আমি চাই তুফান খুব ভালো করুক, তাহলে এই ধরনের সিনেমার দোর খুলে যাবে, আরো ভালো পাঁচটা সিনেমা হবে।
সবই কি পজিটিভ তাহলে ?
- ম্যাক্সিমাম দর্শকের কাছে ভালো লাগবে। কিন্তু রাফির যেই কাজটা আমার সবচেয়ে ভালো লাগতো, সাধারণ দর্শক - ক্রিটিক্সদের একই কাতারে এনে সবাইকে সবদিক থেকে খুশি করা সেটা এখানে পেলাম কি না প্রশ্ন আছে। তাই বলে আমার কাছে খারাপ লেগেছে তা বলবো না, তবে যে হাইপ আর উচ্চাশা নিয়ে গিয়েছিলাম সেখানে খানিকটা ভাটা পড়েছে।
প্রথমত, বাংলাদেশের সিনেমা। গল্পের মধ্যে বলা হচ্ছে এটা বাংলাদেশ। কিন্তু পুরোটা কোলকাতায় শ্যুট হওয়ায় মহল্লা, বাড়ি, রাস্তা - ঘাট, এফডিসি কোনো জায়গায় বাংলাদেশ ফিল পাচ্ছিলাম না। বেশকিছু অভিনেতার কোলকাতার অ্যাকসেন্ট খুব কানে লাগছিলো। এটার জন্য ডিসকানেক্টেড ফিল করেছি।
দ্বিতীয়ত, একজন গ্যাংস্টারকে আপনি অনেক শক্তিশালী দেখাচ্ছেন। যাকে খুশি মেরে ফেলছে, যাকে খুশি শেষ করে দিচ্ছে। কিন্তু কেন তার এত রাগ, কেন সে পুরো দেশ চায়, সেটা ফুটে ওঠেনি। গোলাগুলি তখনই ভালো লাগে যখন সেটার পিছনে এজেন্ডা থাকে, পারপাস থাকে। এটা এখানে ফুটিয়ে তুলতে পারলে সিনেমাটা অন্য জায়গায় চলে যেতো।
তৃতীয়ত, প্রথমার্ধে যে স্টোরি দেখানো হয় এটা অনেকটা ড্র্যাগ করা হয়। ফার্স্ট হাফ থেকে সেকেন্ড হাফ বরং অনেক এনজয়েবল। এবং গাজী রাকায়াতের চরিত্রের সাথে তুফানের একটা ইমোশনাল অ্যাঙ্গেল রাখা উচিত ছিল।
ওভারঅল, ঈদের এন্টারটেইনিং সিনেমা। আর রাফির সিনেমায় একটা মিনিমাম কোয়ালিটি থাকেই। আপনি যদি প্ল্যান করেন যে দেখতে যাবেন, অবশ্যই যাবেন। দেখে জানাবেন কেমন লাগলো। আর সবার কাছে একরকম লাগবে, এমনটাও না।